কয়রায় চিংড়ি ঘেরে পোনার মড়ক


কয়রা প্রতিনিধি :  খুলনার দক্ষিণ জনপদে সম্ভাবনাময় বাগদা চিংড়ি চাষে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে ভাইরাস ফ্রি উন্নতমানের চিংড়ি পোনায় ব্যাপক মড়ক দেখা দেয়। যে কারণে এ অঞ্চলের প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমির চিংড়ি মরে গেছে। আধা নিবিড় পদ্ধতিতে এ চিংড়ির চাষ করেন চাষিরা। কিন্তু মড়কের কারণে চাষিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
সংশ্লি ষ্ট সূত্র জানায়, ভাইরাস আক্রমণে চিংড়ি পোনার মড়ক অব্যাহত রয়েছে। ভাইরাস ফ্রি উন্নতমানের পোনা ব্যবহার করা সত্বেও মড়ক কিছুতেই রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। পোনার মড়ক অব্যাহত থাকায় চিংড়ি চাষিরা বর্তমানে চরম হতাশায় ভুগছেন। খুলনার কয়রা উপজেলার আমাদী এলাকার আয়শা আমির অ্যাকোয়া কালচার লিমিটেড’র স্বত্বাধিকারী আলহাজ আমীর আলী জানান, তার ৫টি পুকুরের মধ্যে সাড়ে সাত বিঘা জমির ৩টি পুকুরেই ভাইরাস আক্রমণ করেছে। এতে প্রায় ২০ লাখ টাকার মাছ মরে গেছে। সময়মত প্রবায়োটিক এবং মিনারেলস সরবরাহ না পাওয়ায় এ ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে বলেও জানান তিনি।
পাইকগাছার সাপোয়ান অ্যাকোয়া কালচার লিমিটেড’র ব্যবস্থাপক অমর কুমার দাস বলেন, তার ৮০ বিঘা জমির ২০টি পুকুরের মাছ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। যার ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৪ কোটি টাকা। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তারা নতুন পোনায় আবারও চাষ শুরু করছেন। এছাড়া আর কোন উপায় নেই বলেও জানান তিনি। এছাড়া শ্যামনগরের মুন্সিগঞ্জ-হরিনগরের ছাত্তার মোড়লসহ অনেকেরই আধানিবিড় পদ্ধতির চিংড়ি চাষে ভাইরাস আক্রমণ করেছে।
আধা নিবিড় পদ্ধতির সাথে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান, বিদেশ থেকে আমদানিকৃত প্রবায়োটিক এবং মিনারেলস সময়মত না পাওয়ায় এ ধরণের ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। এতে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন ক্ষতির মুখে পড়ার আশংকা রয়েছে।
আাধা নিবিড় চিংড়ি চাষ পদ্ধতির সাথে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারি কোন ধরণের প্রণোদনা ছাড়া চাষিরা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে এ পদ্ধতিতে চিংড়ি উৎপাদন অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে গেছেন। এ শিল্পকে রক্ষা করা না গেলে ব্যাপক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন ব্যাহত হবে। তাই এ শিল্প রক্ষা করতে সরকার প্রধানের হস্তক্ষেপ কামনা করেন সুন্দরবন উপকূলীয় এলাকার চিংড়ি চাষিরা।
এ ব্যাপারে কয়রা উপজেলা মৎস্য অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ আলাউদ্দিন বলেন, ভাইরাস ফ্রি উন্নতমানের চিংড়ি পোনায় ভাইরাসের আক্রমই রোধে চিংড়ি চাষিদের নিয়ে সেমিনার করে করণীয় দিক নিদের্শনা দেওয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত তিন দশক ধরে খুলনা অঞ্চলের দাকোপ, পাইকগাছা, কয়রা, আশাশুনি ও শ্যামনগর এলাকায় চিংড়ি চাষ ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। সনাতন পদ্ধতির পরিবর্তে অনেকে আধুনিক প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে ২০০২ সাল থেকে আধা নিবিড় পদ্ধতিতে (স্বল্প জমিতে অধিক উৎপাদন) বাগদা চিংড়ির চাষ শুরু করেন। বর্তমানে প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে আধা নিবিড় পদ্ধতিতে বাগদা চিংড়ির চাষ চলছে। কিন্তু ভাইরাসের কারণে চাষিরা বিকল্প চাষের কথা ভাবছেন।


Posted by কয়রার সংবাদ 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

কয়রা সহ খুলনায় দেড় বছরে বাল্যবিয়ের শিকার ৩ সহস্রাধিক ছাত্রী

কয়রায় কার্তিক হত্যা মামলার প্রধান আটক

যা ছিল চাওয়া, তা হল পাওয়া বিদায়ী ম্যাচ জিতলেন মাশরাফি