গোলপাতার রাজস্ব আদায়ে ‘গোলমাল’
কয়রা ডেস্ক : অতিরিক্ত গোলপাতা বোঝাই ও কর্তন নিষিদ্ধ কাঠ পাওয়ায় ১১টি নৌকা পাইকগাছার মিনাজ গড়ইখালী এলাকা থেকে গত ২৭ মার্চ জব্দ করে বনবিভাগ। শাস্তি হিসেবে বাজারমূল্যের তিনগুণ জরিমানা প্রায় ৬ লাখ টাকা জমা দিতে নির্দেশ দেয়া হয়। যার ৪ লাখ জমা দিয়ে বাকী টাকা আত্মসাত করছেন বনজীবী ফেডারেশনের শীর্ষ নেতা। পশ্চিম বন বিভাগে লুটপাটে সুবিধা করতে না পেরে তার নেতৃত্বে অর্ধশতাধিক নৌকা প্রথম দফায় সংগ্রহের পর থেকে পূর্ব বিভাগের ঢাংমারী স্টেশন থেকে পাশ পারমিট সংগ্রহ করে। সে কারণেই গত মৌসুমে গোলপাতা আহরণের রাজস্ব আদায়ে গোলমাল দেখা দিয়েছে বলে মন্তব্য খোদ বনবিভাগের কর্মকর্তাদের।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, নৌকাগুলো জব্দের পর জরিমানার ৬ লাখ টাকা বনজীবী ফেডারেশনের সভাপতি বাচ্চু মীরের কাছে জমা দেয় ওরা ১১ জন নৌকা মালিক। সে অর্থের প্রায় ৪ লাখ টাকা টাকা পূর্ব বনবিভাগে জমা দিয়েছেন, তবে জরিমানা পূর্ণ অর্থ না পাওয়া রশিদ দেয়নি বনবিভাগ। এর মধ্যে জরিমানা অর্থ মওকুফের বেনামী আবেদন করেছেন বাচ্চু মীর। যা নৌকা মালিকরা জানেন না বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন। এখানেই রাজস্বের প্রায় দুই লাখ টাকা আত্মসাতের চেষ্টা করছেন বনজীবী ফেডারেশনের সভাপতি বাচ্চু মীর। তার নেতৃত্বেই পশ্চিম বনবিভাগের প্রায় অর্ধশত নৌকা পূর্ববিভাগে গিয়ে গোলপাতা আহরণ করেছে। যাদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত গোলপাতা বোঝাই ও কর্তন নিষিদ্ধ গাছ কাটার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। গত ২৭ মার্চ জব্দকৃত ১১টি নৌকা থেকে অতিরিক্ত তিন হাজার ৭৭৫ কুইন্টাল বনজদ্রব্য পাওয়া যায়। গত ৩০ মার্চ তদন্ত প্রতিবেদনে খুলনা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক এসএম শোয়াইব খান, নলিয়ান স্টেশন কর্মকর্তা মুহাম্মদ মকরুল ইসলাম আকন্দ ও চাঁদপাই গোলপাতা কূপ কর্মকর্তা মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান উল্লেখ করেছেন। সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগ থেকে লুটপাটের এ সুযোগ না পাওয়ায় ওই চক্রটি পূর্ব বিভাগ থেকে (২য় টিপ থেকে) পাশ পারমিট সংগ্রহ করেছে বলে স্বীকার করেছেন বনরক্ষীরা।
এ প্রসঙ্গে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোঃ সাইদুল ইসলাম বলেন, “জরিমানা সব টাকা না পাওয়ায় এখনো রশিদ দেয়া হয়নি। শাস্তিমূলক জরিমানার পর আর মওকুফের সুযোগ নেই।” তিনি আরও বলেন, “এ বছর পূর্ব বনবিভাগ থেকে গোলপাতা আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৭ হাজার কুইন্টাল। এখনো লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও রাজস্ব আদায়ের হিসাব শেষ করতে পারিনি। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় এ সম্পর্কে একটি মিটিং হবে। সেখানেই বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবো।”
পূর্ব বন বিভাগের লক্ষ্যমাত্রা যেখানে ৬৭ হাজার কুইন্টাল; সেই বিভাগ থেকে গোলপাতা সংগ্রহ করা ১১টা নৌকায় অতিরিক্ত বোঝাই ধরা পড়েছে তিন হাজার ৭৭৫ কুইন্টাল বনজদ্রব্য। পূর্ব বিভাগেই রাজস্ব আদায়ে গোলমাল পাকিয়েছে বলে বনবিভাগের সূত্র জানিয়েছেন। তবে অতীতের রেকর্ড ভেঙ্গে রাজস্ব আদায় বেড়েছে পশ্চিম বনবিভাগের।
সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোহাম্মদ সাইদ আলী বলেন, “গত মৌসুমে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ১৮ লাখ ৬৫ হাজার ৫৬৫ টাকা। এবার ৯২ হাজার কুইন্টাল গোলপাতা লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে ৮৫ হাজার ৮৪ দশমিক ৯১ কুইন্টাল। যার বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে প্রায় ২৭ লাখ ২৯ হাজার টাকা। এ বিভাগ থেকে ৪৭২টি বিএলসি দেয়া হয়।”
তিনি আরও বলেন, “প্রথম টিপে তারা পশ্চিম বনবিভাগের পাশ পারমিট নিয়েছিল। পরে একজনের নেতৃত্বে ৩৮টি নৌকা পূর্ব বিভাগ থেকে পাশ সংগ্রহ করায় পশ্চিম বনবিভাগের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। ওই নৌকাগুলোর মধ্য থেকে ১১টি নৌকা গত ২৭ মার্চ অতিরিক্ত গোলপাতা বোঝাই ও কর্তন নিষিদ্ধ কাঠ পাওয়ায় পাইকগাছা থেকে আমরা জব্দ করি। শাস্তিমূলক প্রায় ৬ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল। ওই অর্থ পূর্ব বনবিভাগে জমা দেবার কথা। তাদের চলে যাবার পরও রাজস্ব আদায় বেড়েছে।”
প্রসঙ্গত, সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জে একটি, চাঁদপাই রেঞ্জে দু’টি এবং পশ্চিম বিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জে একটি এবং খুলনা রেঞ্জে দু’টি গোলপাতা কূপ রয়েছে। ২০১৬ সালে ওইসব কূপ থেকে গোলপাতা সংগ্রহ করার জন্য ৪৩৭টি বিএলসি দেয়া হয়েছিল। বাওয়ালীরা গেল মৌসুমে ওইসব কূপ থেকে ৯৬ হাজার ৯৪০ কুইন্টাল গোলপাতাকজ সংগ্রহ করে। গোলপাতা থেকে সরকারের প্রায় ২৯ লাখ টাকা রাজস্ব আয় হয়েছিল। এ বছর সুন্দরবন পূর্ব বিভাগ থেকে ৬৭ হাজার এবং পশ্চিম বিভাগে ৯২ হাজার কুইন্টাল গোলপাতা সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। প্রতি কুইন্টাল গোলপাতার সরকারি রাজস্ব মাত্র ২৫ টাকা নির্ধারিত। ২৮ জানুয়ারি থেকে বিএলসি দেয়া শুরু হয়ে গোলপাতা আহরণ চলে ৩০ মার্চ পর্যন্ত।
Posted by কয়রার সংবিদ
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, নৌকাগুলো জব্দের পর জরিমানার ৬ লাখ টাকা বনজীবী ফেডারেশনের সভাপতি বাচ্চু মীরের কাছে জমা দেয় ওরা ১১ জন নৌকা মালিক। সে অর্থের প্রায় ৪ লাখ টাকা টাকা পূর্ব বনবিভাগে জমা দিয়েছেন, তবে জরিমানা পূর্ণ অর্থ না পাওয়া রশিদ দেয়নি বনবিভাগ। এর মধ্যে জরিমানা অর্থ মওকুফের বেনামী আবেদন করেছেন বাচ্চু মীর। যা নৌকা মালিকরা জানেন না বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন। এখানেই রাজস্বের প্রায় দুই লাখ টাকা আত্মসাতের চেষ্টা করছেন বনজীবী ফেডারেশনের সভাপতি বাচ্চু মীর। তার নেতৃত্বেই পশ্চিম বনবিভাগের প্রায় অর্ধশত নৌকা পূর্ববিভাগে গিয়ে গোলপাতা আহরণ করেছে। যাদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত গোলপাতা বোঝাই ও কর্তন নিষিদ্ধ গাছ কাটার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। গত ২৭ মার্চ জব্দকৃত ১১টি নৌকা থেকে অতিরিক্ত তিন হাজার ৭৭৫ কুইন্টাল বনজদ্রব্য পাওয়া যায়। গত ৩০ মার্চ তদন্ত প্রতিবেদনে খুলনা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক এসএম শোয়াইব খান, নলিয়ান স্টেশন কর্মকর্তা মুহাম্মদ মকরুল ইসলাম আকন্দ ও চাঁদপাই গোলপাতা কূপ কর্মকর্তা মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান উল্লেখ করেছেন। সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগ থেকে লুটপাটের এ সুযোগ না পাওয়ায় ওই চক্রটি পূর্ব বিভাগ থেকে (২য় টিপ থেকে) পাশ পারমিট সংগ্রহ করেছে বলে স্বীকার করেছেন বনরক্ষীরা।
এ প্রসঙ্গে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোঃ সাইদুল ইসলাম বলেন, “জরিমানা সব টাকা না পাওয়ায় এখনো রশিদ দেয়া হয়নি। শাস্তিমূলক জরিমানার পর আর মওকুফের সুযোগ নেই।” তিনি আরও বলেন, “এ বছর পূর্ব বনবিভাগ থেকে গোলপাতা আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৭ হাজার কুইন্টাল। এখনো লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও রাজস্ব আদায়ের হিসাব শেষ করতে পারিনি। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় এ সম্পর্কে একটি মিটিং হবে। সেখানেই বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবো।”
পূর্ব বন বিভাগের লক্ষ্যমাত্রা যেখানে ৬৭ হাজার কুইন্টাল; সেই বিভাগ থেকে গোলপাতা সংগ্রহ করা ১১টা নৌকায় অতিরিক্ত বোঝাই ধরা পড়েছে তিন হাজার ৭৭৫ কুইন্টাল বনজদ্রব্য। পূর্ব বিভাগেই রাজস্ব আদায়ে গোলমাল পাকিয়েছে বলে বনবিভাগের সূত্র জানিয়েছেন। তবে অতীতের রেকর্ড ভেঙ্গে রাজস্ব আদায় বেড়েছে পশ্চিম বনবিভাগের।
সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোহাম্মদ সাইদ আলী বলেন, “গত মৌসুমে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ১৮ লাখ ৬৫ হাজার ৫৬৫ টাকা। এবার ৯২ হাজার কুইন্টাল গোলপাতা লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে ৮৫ হাজার ৮৪ দশমিক ৯১ কুইন্টাল। যার বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে প্রায় ২৭ লাখ ২৯ হাজার টাকা। এ বিভাগ থেকে ৪৭২টি বিএলসি দেয়া হয়।”
তিনি আরও বলেন, “প্রথম টিপে তারা পশ্চিম বনবিভাগের পাশ পারমিট নিয়েছিল। পরে একজনের নেতৃত্বে ৩৮টি নৌকা পূর্ব বিভাগ থেকে পাশ সংগ্রহ করায় পশ্চিম বনবিভাগের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। ওই নৌকাগুলোর মধ্য থেকে ১১টি নৌকা গত ২৭ মার্চ অতিরিক্ত গোলপাতা বোঝাই ও কর্তন নিষিদ্ধ কাঠ পাওয়ায় পাইকগাছা থেকে আমরা জব্দ করি। শাস্তিমূলক প্রায় ৬ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল। ওই অর্থ পূর্ব বনবিভাগে জমা দেবার কথা। তাদের চলে যাবার পরও রাজস্ব আদায় বেড়েছে।”
প্রসঙ্গত, সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জে একটি, চাঁদপাই রেঞ্জে দু’টি এবং পশ্চিম বিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জে একটি এবং খুলনা রেঞ্জে দু’টি গোলপাতা কূপ রয়েছে। ২০১৬ সালে ওইসব কূপ থেকে গোলপাতা সংগ্রহ করার জন্য ৪৩৭টি বিএলসি দেয়া হয়েছিল। বাওয়ালীরা গেল মৌসুমে ওইসব কূপ থেকে ৯৬ হাজার ৯৪০ কুইন্টাল গোলপাতাকজ সংগ্রহ করে। গোলপাতা থেকে সরকারের প্রায় ২৯ লাখ টাকা রাজস্ব আয় হয়েছিল। এ বছর সুন্দরবন পূর্ব বিভাগ থেকে ৬৭ হাজার এবং পশ্চিম বিভাগে ৯২ হাজার কুইন্টাল গোলপাতা সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। প্রতি কুইন্টাল গোলপাতার সরকারি রাজস্ব মাত্র ২৫ টাকা নির্ধারিত। ২৮ জানুয়ারি থেকে বিএলসি দেয়া শুরু হয়ে গোলপাতা আহরণ চলে ৩০ মার্চ পর্যন্ত।
Posted by কয়রার সংবিদ
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন