চিকিৎসক সংকটে খুলনার সরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থা




হোম  আঞ্চলিক সংবাদ
আঞ্চলিক সংবাদসর্বশেষ সংবাদ
চিকিৎসক সংকটে খুলনার সরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থা
ফেব্রুয়ারি ১, ২০১৯ 41

বিভাগের ১০ সদর এবং ৫৯ উপজেলা হাসপাতালে
শূন্য সহস্রাধিক চিকিৎসক ও আড়াই হাজার কর্মচারি

এইচ এম আলাউদ্দিন ঃ পঞ্চাশ শয্যার বাগেরহাট সদর হাসপাতালটি বর্তমানে একশ’ শয্যায় উন্নীত হয়েছে। আর পঞ্চাশ শয্যার জনবলেরও অর্ধেক দিয়ে চালাতে হচ্ছে হাসপাতালটি। এ হাসপাতালের ৫০ শয্যার জন্য ২৪জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও বর্তমানে কর্মরত আছেন মাত্র ১৩জন। বিগত এক বছর ধরে দু’জন রয়েছেন অননুমোদিত ছুটিতে। চিকিৎসকের ন্যায় কর্মচারী সংকটও রয়েছে প্রচুর। এ হাসপাতালটিতে মোট জনবলের তিন ভাগের এক ভাগ কর্মরত আছেন বলেও জানান জেলা সিভিল সার্জন।
এমনিভাবে চরম জনবল সংকটের মধ্যদিয়েই চলছে খুলনা বিভাগের ১০টি সদর ও ৫৯টি উপজেলা হাসপাতাল। চিকিৎসক সংকটের পাশাপাশি রয়েছে কর্মচারী সংকটও। খুলনা বিভাগে মোট চিকিৎসকের অর্ধেকেরও কম কর্মরত রয়েছেন উল্লেখ করে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের দপ্তরের সূত্রটি বলছে, খুলনা মেডিকেল কলেজ ও শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালসহ বিভাগীয় পর্যায়ের কিছু প্রতিষ্ঠান ছাড়া ১০ জেলায় ১৮২২টি মঞ্জুরিকৃত পদের মধ্যে কর্মরত আছেন মাত্র ৭৭৩জন চিকিৎসক। অর্থাৎ এক হাজার ৪৯জন চিকিৎসকের পদই বর্তমানে শূন্য। এছাড়া দ্বিতীয় থেকে ৪র্থ শ্রেনি পর্যন্ত কর্মচারীদের মঞ্জুরিকৃত পদসংখ্যা ১১ হাজার ২২৭টি হলেও কর্মরত আছেন মাত্র আট হাজার ৫৩৬জন। চিকিৎসক পদে বিভাগের সবচেয়ে বেশি সংকট সাতক্ষীরা জেলায়(২৮%) আর কর্মচারীদের মধ্যে বেশী সংকট মাগুরা জেলায়(৭১%)। জনবল সংকটের কারনেই খুলনা বিভাগের সরকারী হাসপাতালগুলো চলছে ঢিমে-তালে।
খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা: সুকান্ত কুমার রায় বলেন, ১০টি জেলা হাসপাতাল ও জেলাগুলোর আওতাধীন সকল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ছাড়াও স্বাস্থ্য পরিচালক দপ্তরের আওতাধীন প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে খুলনা এমএসডি, পোর্ট হেলথ অফিস ও বক্ষব্যাধি হাসপাতাল। প্রতিমাসে জেলাগুলোর সিভিল সার্জনদের দেয়া প্রতিবেদন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানো হয়। প্রতিটি জেলায়ই চিকিৎসক ও কর্মচারী সংকট রয়েছে। তবে বর্তমানে চিকিৎসক নিয়োগ প্রক্রিয়ার পাশাপাশি কর্মচারী নিয়োগেরও চেষ্টা চলছে। তবে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগের বিষয়টি আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে হবে এমন সিদ্ধান্ত থাকায় ইতোমধ্যেই বেশকিছু জেলায় এজন্য অনুমোদন পাওয়া গেছে। শীঘ্রই কর্মচারী নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হলে সংকট দূর হবে বলে আশা করছেন তিনি।
স্বাস্থ্য পরিচালকের দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী খুলনা জেলায় ২৪০টি পদের মধ্যে ১১৪ জন চিকিৎসক এবং ১৭১৮টির পদের মধ্যে ১২৬৫জন কর্মচারী কর্মরত রয়েছেন। এমনিভাবে বাগেরহাটে ২২০জনের মধ্যে ১১৪ জন চিকিৎসক ও ১৪৫১জনের মধ্যে ১০৮৩জন কর্মচারী, সাতক্ষীরায় ২০৫জনের মধ্যে ৫৮ জন চিকিৎসক ও ১৪১০জনের মধ্যে ১০৯৫জন কর্মচারী, যশোরে ২৭৮জনের মধ্যে ১৪৯ জন চিকিৎসক ও ১৭২৬জনের মধ্যে ১৩১৯জন কর্মচারী, ঝিনাইদহে ২১২জনের মধ্যে ৬৩ জন চিকিৎসক ও ৯১০জনের মধ্যে ৬৯১জন কর্মচারী, মাগুরায় ১১৭জনের মধ্যে ৫১ জন চিকিৎসক ও ৭৪৭জনের মধ্যে ৫৩৬জন কর্মচারী, নড়াইলে ১১৫জনের মধ্যে ৪২ জন চিকিৎসক ও ৬১৭জনের মধ্যে ৫০৭জন কর্মচারী, কুষ্টিয়ায় ২১৯জনের মধ্যে ১২২ জন চিকিৎসক ও ১১৪০জনের মধ্যে ৮৯৬জন কর্মচারী, চুয়াডাঙ্গায় ৯৩জনের মধ্যে ৫৪ জন চিকিৎসক ও ৬০৫জনের মধ্যে ৪৯১জন কর্মচারী, এবং মেহেরপুরে ১০২জনের মধ্যে ৩৩ জন চিকিৎসক ও ৫৮২জনের মধ্যে ৪৫৫জন কর্মচারী কর্মরত আছেন।
বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা: ডিজেএম শামসুজ্জামান বলেন, ৩৪% চিকিৎসক ও ৭৪% কর্মচারী দিয়ে চরম সংকটের মধ্যদিয়ে হাসপাতালগুলো চালাতে হচ্ছে। প্রতিনিয়ত উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জনবল সংকটের বিষয়টি জানানো হচ্ছে। তারাও চেষ্টা করছেন। নতুন করে চিকিৎসক নিয়োগ না দেয়া পর্যন্ত সংকট দূর হচ্ছেনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সে চেষ্টাও কেন্দ্রীয়ভাবে চলছে। আশা করা হচ্ছে, দ্রুত এর সমাধান হবে।
ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডা: রাশেদা সুলতানা বলেন, ৩৭তম বিসিএস(স্বাস্থ্য) ক্যাডারের চিকিৎসকদের পদায়ন হলেই চিকিৎসক সংকট দূর হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়া কর্মচারী নিয়োগের প্রক্রিয়া সর্বত্রই শুরু হয়েছে। দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হলেই জনবল সংকট দূর হবে। এর ফলে সরকারি হাসপাতালগুলো স্বাস্থ্যসেবায় আরও এগিয়ে যেতে সক্ষম হবে।


Posted By #কয়রার_সংবাদ

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

কয়রা সহ খুলনায় দেড় বছরে বাল্যবিয়ের শিকার ৩ সহস্রাধিক ছাত্রী

কয়রায় কার্তিক হত্যা মামলার প্রধান আটক

যা ছিল চাওয়া, তা হল পাওয়া বিদায়ী ম্যাচ জিতলেন মাশরাফি