কয়রায় ঐতিহাসিক মসজিদকুড় মসজিদ



কয়রা ডেস্ক : খুলনা কয়রা উপজেলার বহু প্রাচীন গ্রাম আমাদি। কপোতাক্ষ নদের পূর্ব পারের এই গ্রাম ইতিহাসপ্রসিদ্ধ। ধারণা করা হয়, মহাত্মা খানজাহান আলীর শিষ্য বুড়া খান ও ফতেহ খান এই গ্রামে কাছারি করে এলাকা শাসন করতেন ১৪৫০-১৪৯০ সালের সময়কালে। তাঁরা এখানে একটি নয় গম্বুজ মসজিদ নির্মাণ করেন, নাম রাখেন মসজিদকুড়। ইট-সুরকির তৈরি মসজিদটি দক্ষিণ বাংলার সবচেয়ে প্রাচীন প্রত্নসম্পদ।কপোতাক্ষ সুন্দরবনের নদ। সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসের সময় রাক্ষসী রূপ পরিগ্রহ করে। মসজিদের দক্ষিণ দিকে বুড়া খান ও ফতেহ খানের কাছারিবাড়ি ও সমাধি ছিল, এর অনেকটাই কপোতাক্ষীর বন্যায় ধুয়েমুছে গেছে। মূল মসজিদও একসময় পলিতে তলিয়ে গিয়েছিল। সমস্ত এলাকা জঙ্গল হয়ে গিয়েছিল। জীবজন্তুর ভয়ে মানুষ মসজিদে যেতে সাহস করত না। বিংশ শতাব্দীর শুরুতে এলাকার বিপুল সংস্কার করে মসজিদটি উদ্ধার করা হয়।

বর্গাকার এই মসজিদের প্রতি পাশের মাপ হচ্ছে ১৬ দশমিক ৭৬ মিটার, ভেতরের মাপ ১২ দশমিক ১৯ মিটার করে। কেবলামুখী দেয়াল বাদে বাকি তিন দেয়ালে মসজিদে ঢোকার জন্য তিনটি করে খিলান প্রবেশদ্বার আছে। মাঝের প্রবেশদ্বারগুলো অপেক্ষাকৃত বড়। কেবলামুখী দেয়াল কুঁদে অর্ধবৃত্তাকার মিহরাব তৈরি করা হয়েছে। মাঝের মিহরাব অপেক্ষাকৃত বড়। 

মসজিদের ভেতরে চারটি স্তম্ভের ওপর ছাদ ভর করে আছে। এই চারটি স্তম্ভ মসজিদের ভেতরের অংশকে নয়টি সমবর্গক্ষেত্রে ভাগ করেছে। বর্গক্ষেত্রগুলো গম্বুজ দিয়ে ঢাকা।

 


মসজিদটি একসময় টেরাকোটা দিয়ে সজ্জিত ছিল, এখন এগুলোর অনেকটাই খসে পড়েছে, নয়তো খোয়া গেছে।আমাদির মসজিদকুড় মসজিদের নকশার সঙ্গে পাণ্ডুয়ার আদিনা মসজিদের পাশে সিকান্দার শাহর নয় গম্বুজ সমাধির নকশার মিল লক্ষণীয়।

অবশ্য বাগেরহাটে খানজাহান নির্মিত ইমারতগুলোর নকশাও প্রায় একই ধরনের। মসজিদটি বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের তত্ত্বাবধানে আছে। কিভাবে যাওয়া যায়: আমাদী ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ভ্যান যোগে আমাদী বাজার হয়ে মসজিদকুড় ব্রীজ ভায়া মসজিদকুড় ওয়াপদা রাস্তা

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

কয়রা সহ খুলনায় দেড় বছরে বাল্যবিয়ের শিকার ৩ সহস্রাধিক ছাত্রী

কয়রায় কার্তিক হত্যা মামলার প্রধান আটক

যা ছিল চাওয়া, তা হল পাওয়া বিদায়ী ম্যাচ জিতলেন মাশরাফি